মাত্র একদিনে ঘুরে আসতে পারেন এমন পাঁচটি ছোট দেশ
বিশ্বের অনেক দেশ তাদের বিশাল আকার দিয়ে দর্শনার্থীদের বিস্মিত করে থাকে। বিপরীতে, এমন কিছু দেশ রয়েছে যাদের ক্ষুদ্র আকার সমানভাবে বিস্ময়কর। এই নিবন্ধে, আমরা পৃথিবীর পাঁচটি ক্ষুদ্রতম দেশ সম্পর্কে জানব।
বৈকাল হ্রদ, রাশিয়া
বৈকাল হ্রদ বিশ্বের ১০ টি গভীরতম হ্রদের তালিকার শীর্ষে রয়েছে। আয়তনের দিক থেকে এটি রাশিয়া এবং বিশ্বের বৃহত্তম হ্রদ। বৈকাল হ্রদের সর্বোচ্চ গভীরতা ১,৬৪২ মিটার এবং এটি দক্ষিণ সাইবেরিয়ায় অবস্থিত। এটি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মিঠাপানির জলাধার হিসেবে বিবেচিত। এর আয়তন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমস্ত মিঠা পানির হ্রদের আয়তনকে ছাড়িয়ে গেছে। এখানে বিশ্বের প্রায় ২০% পানি রয়েছে। সর্বোপরি, এটি একটি প্রাচীন হ্রদ যা একটি স্বতন্ত্র বাস্তুতন্ত্রের বজায় রেখে ২৫-৩৫ মিলিয়ন বছর ধরে বিদ্যমান এবং ১৭০০-এরও বেশি প্রজাতির উদ্ভিদ ও প্রাণী এখানে বাস করে। বৈকাল হ্রদ ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসেবেও স্বীকৃতি পেয়েছে।
টাঙ্গানীকা হ্রদ, আফ্রিকা
টাঙ্গানীকা হ্রদ আমাদের তালিকার দ্বিতীয় বৃহত্তম হ্রদ। এটি আফ্রিকা এবং বিশ্বের গভীরতম হ্রদ যার সর্বোচ্চ গভীরতা ১,৪৭১ মিটার। এটি বেশ দীর্ঘ (৬৭৩ কি.মি.) এবং আফ্রিকার চারটি দেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে- তানজানিয়া, কঙ্গো, বুরুন্ডি এবং জাম্বিয়া। ব্রিটিশ অভিযাত্রী জন স্পেক এবং রিচার্ড বার্টন ১৮৫৮ সালে হ্রদটি আবিষ্কার করেছিলেন। এটি আফ্রিকার গভীরতম টেকটোনিক অববাহিকায় অবস্থিত। অসংখ্য ছোট নদী এবং ঝর্ণা লাকুগা নদীর প্রধান স্রোতে মিশে এই হ্রদে প্রবাহিত হয়। টাঙ্গানিকা হ্রদে কুমির, জলহস্তী, জলচর পাখি এবং বেশ অনেকগুলি অনন্য প্রজাতির মাছ বসবাস করে।
ভোস্টক হ্রদ, অ্যান্টার্কটিকা
ভোস্টক হ্রদ এই তালিকার তৃতীয় স্থান অধিকার করেছে। এটি পৃথিবীর সর্ববৃহৎ সাবগ্লেসিয়াল হ্রদ। বরফের নীচে হ্রদটির পৃষ্ঠ ৪ কি.মি.। এই স্বতন্ত্র ১২০০ মিটার গভীর জলাধারটি রাশিয়ার ভোস্টক স্টেশনের নীচে অ্যান্টার্কটিকায় অবস্থিত এবং সেই অনুযায়ী এর নামকরণ করা হয়েছে। ১৯৯৬ সালে আবিষ্কৃত এই হ্রদে বরফের আবরণ খননকার্য ২০ বছর ধরে চলতে থাকে। ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে, রাশিয়ান বিজ্ঞানীরা পানির উপরের পৃষ্ঠে পৌঁছেছিলেন। জলাধারটির আবিষ্কার প্রাচীন জীবন রূপ সম্পর্কে রহস্য উন্মোচন করতে পারে যা লক্ষ লক্ষ বছর আগে বিদ্যমান ছিল।
কাস্পিয়ান সাগর, রাশিয়া
ক্যাস্পিয়ান সাগর হল বিশ্বের বৃহত্তম লবণাক্ত পানির এন্ডোরিহেক অববাহিকা এবং এর সর্বোচ্চ গভীরতা ১,০২৫ মিটার। এটিকে একটি সমুদ্র হিসাবে বিবেচনা করা হয় কারণ এর মূল অংশে সমুদ্রের ভূত্বক স্তর রয়েছে। সমুদ্রটির অনন্য অবস্থানের কারণে (ইউরোপ এবং এশিয়ার মাঝখানে), এর পানি রাশিয়া, ইরান, কাজাখস্তান, আজারবাইজান এবং তুর্কমেনিস্তানের পাঁচটি দেশের উপকূল ধরে বয়ে যায়। ১৩০০ টিরও বেশি নদী কাস্পিয়ান সাগরে প্রবাহিত হয় এবং এর মধ্যে ভোলগা নদী বৃহত্তম। কাস্পিয়ান সাগরে প্রচুর প্রাণী রয়েছে। এটি কাস্পিয়ান সীল এবং বিভিন্ন প্রজাতির স্টার্জনদের বাসস্থান। এই সাগরের পানির অন্তর্দেশীয় অংশটি জ্বালানী সম্পদেরও সমৃদ্ধ উৎস। এখানে মোট $১২ ট্রিলিয়ন ডলারের তেল ও গ্যাস উৎপাদন হয়।
সান মার্টিন, দক্ষিণ আমেরিকা
বিশ্বের পঞ্চম গভীরতম হ্রদ হচ্ছে সান মার্টিন, যা ও'হিগিন্স নামেও পরিচিত, । এই জলাধারটি ৮৩৬ মিটার গভীর। লেকটি আর্জেন্টিনা এবং চিলির সীমান্তে পেটাগোনিয়াতে অবস্থিত এবং সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২৫০ মিটার উঁচু। উল্লেখযোগ্যভাবে, হ্রদটি আর্জেন্টিনায় সান মার্টিন এবং চিলিতে ও’হিগিন্স নামে পরিচিত। দুটি নামই দুই দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের দুই নায়ক আর্জেন্টিনার জোসে দে সান মার্টিন এবং চিলির বার্নার্ডো ওহিগিন্সের নাম থেকে এসেছে। হ্রদটি প্রধানত মায়ার নদী এবং ছোট হিমবাহ প্রবাহ দ্বারা গঠিত। সান মার্টিনের পানিতে হিমবাহের গুড়া থাকায় এর রঙ অনেকটা হালকা-নীলচে দুধের মত। এই গুড়া হিমবাহ থেকে গলিত পানির সাথে হ্রদে পড়ে এবং পানির নীচে অবস্থান করে।
মালাউই হ্রদ, পূর্ব আফ্রিকা
আমাদের তালিকার ষষ্ঠ স্থান অধিকার করেছে মালাউই হ্রদ, যা নায়সা হ্রদ নামেও পরিচিত। এর সর্বোচ্চ গভীরতা ৭০৬ মিটার। হ্রদটি মালাউই, মোজাম্বিক এবং তানজানিয়ার মধ্যে পূর্ব আফ্রিকান রিফ্ট সিস্টেমের দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থিত। পৃথিবীর অন্যান্য হ্রদের তুলনায় মালাউই হ্রদের গ্রীষ্মমন্ডলীয় পানিতে অনন্য প্রজাতির মাছ বসবাস করে। বিজ্ঞানীদের মতে, গত ১০০,০০০ বছরে এটির গভীরতা ১০০ মিটার হ্রাস পেয়েছে। মূলত জলপৃষ্ঠের বাষ্পীভবন (৮০% পর্যন্ত) এবং মালাউই হ্রদের দক্ষিণ প্রবাহ শায়ারের কারণে গভীরতা হ্রাস পেয়েছে।
ইসিক-কুল, মধ্যপ্রাচ্য
ইসিক-কুল পূর্ব কিরগিজস্তানের উত্তর তিয়ান শান পাহাড়ে অবস্থিত ৭০২ মিটার গভীর একটি হ্রদ। এটি সপ্তম বৃহত্তম এন্ডোরিহেক অববাহিকা। কিরগিজ ভাষায় ইসিক-কুলের অর্থ "উষ্ণ হ্রদ"। হ্রদটির এই নাম মূলত ঠান্ডা না হওয়া লবণাক্ত পানির কারণে হয়েছে। ইসিক-কুলের সাথে কয়েকটি আকর্ষণীয় কিংবদন্তি যুক্ত আছে। এই কিংবদন্তিগুলির মধ্যে একটির মতে সেন্ট ম্যাথিউয়ের ধ্বংসাবশেষ সহ একটি প্রাচীন আর্মেনিয়ান গির্জা হ্রদের পৃষ্ঠের নীচে চাপা পড়ে আছে। এই পৌরাণিক কাহিনীগুলি একেবারে ভিত্তিহীন নয়ঃ ২০০৬ সালে ইসিক-কুলের নীচে ২,৫০০ বছর আগের একটি প্রাচীন সভ্যতার চিহ্ন আবিষ্কৃত হয়েছিল।
গ্রেট স্লেভ হ্রদ, কানাডা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
গ্রেট স্লেভ হ্রদ বিশ্বের অষ্টম গভীরতম হ্রদ। এর সর্বোচ্চ গভীরতা ৬১৪ মিটার। হ্রদটি বছরে আট মাস হিমায়িত থাকে এবং শীতকালে অবিশ্বাস্যভাবে ঘন বরফের স্তরে ঢাকা থাকে। এই বরফে যেকোন ট্রাক স্বচ্ছন্দে চলতে পারবে করে বলে মনে করা হয়। ১৯৩০-এর দশকে, এখানে স্বর্ণের খনি আবিষ্কৃত হয়েছিল, যা তথাকথিত গোল্ড ফিভারের সূচনা করে। এই ধরনের আশ্চর্যজনক আবিষ্কারের ফলে হ্রদের তীরে ইয়েলোনাইফ শহর প্রতিষ্ঠিত হয়।
ক্র্যাটার হ্রদ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
সর্বোচ্চ ৫৯৪ মিটার গভীরতাসম্পন্ন ক্র্যাটার হ্রদ এই তালিকার নবম স্থান অধিকার করেছে। এটি ওরেগনের ক্র্যাটার লেক ন্যাশনাল পার্কের প্রধানতম আকর্ষণ। ৭০০০ বছর আগে মাউন্ট মাজামা আগ্নেয়গিরি ভেঙে যাওয়ার ফলে ক্র্যাটার হ্রদ সৃষ্টি হয়েছিল। বরফ গলে যাওয়ার ফলে সৃষ্ট গভীর নীল রঙের পানির স্বচ্ছতার জন্য হ্রদটি বিখ্যাত। ক্র্যাটার হ্রদ 'ওল্ড ম্যান অফ দ্য লেক' নামে পরিচিত একটি কাঠের গুড়ির জন্যও পরিচিত, যেটি ১০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সেখানে উল্লম্বভাবে দাঁড়িয়ে আছে।
মাতানো হ্রদ, ইন্দোনেশিয়া
মাতানো হ্রদ হল পৃথিবীর দশম গভীরতম হ্রদ। টেকটোনিক জাতের এই পানির অববাহিকা ইন্দোনেশিয়ার দক্ষিণ সুলাওয়েসিতে অবস্থিত। ৫৯০ মিটার গভীর হ্রদটি দেশটির মিঠা পানির মূল উৎস। এটি তার স্ফটিকের মত স্বচ্ছ পানির জন্য বিখ্যাত যেখানে বিরল প্রজাতির উদ্ভিদ, মাছ এবং ক্রাস্টেসিয়ানরা বাস করে। মাতানো হ্রদের তীরে নিকেল আকরিকের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে।
বিশ্বের অনেক দেশ তাদের বিশাল আকার দিয়ে দর্শনার্থীদের বিস্মিত করে থাকে। বিপরীতে, এমন কিছু দেশ রয়েছে যাদের ক্ষুদ্র আকার সমানভাবে বিস্ময়কর। এই নিবন্ধে, আমরা পৃথিবীর পাঁচটি ক্ষুদ্রতম দেশ সম্পর্কে জানব।
পরপর দুই বছর ধরে, হসপিটালিটি ইন্ডাস্ট্রির অন্যতম বিখ্যাত প্রতিষ্ঠান ফিফটি বেস্ট ব্র্যান্ড বিশ্বের সেরা ৫০টি হোটেলের তালিকা প্রকাশ করে আসছে। এই মর্যাদাপূর্ণ তালিকার সেরা পাঁচটি হোটেল সম্পর্কে জেনে নিন।
বৈশ্বিক অর্থ বাজারে অসংখ্য বিনিয়োগকারী রয়েছে, যা প্রত্যেকেরই লক্ষ্য হচ্ছে লাভ করা, কিন্তু শুধুমাত্র একটি নির্বাচিত গোষ্ঠী ধারাবাহিকভাবে প্রতিদিন মিলিয়ন মিলিয়ন ডলারের লেনদেন সম্পাদন করে। এই নেতৃস্থানীয় আর্থিক প্রতিষ্ঠান বাজারে মুখ্য ভূমিকা পালন করে। এই নিবন্ধে সেগুলোর সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক